কার্বেন্ডাজিম(Carbendazim) এর গ্রুপ পরিচিতি
কার্বেন্ডাজিম কী?
কার্বেন্ডাজিম (Carbendazim) একটি বহুমুখী, প্রবহমান ছত্রাকনাশক। ছত্রাক দমনে প্রতিরোধক এবং প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
কার্বেন্ডাজিম পাতা পোড়া, পাতায় দাগ, পাউডারি মিলডিউ, ডাউনি মিলডিউ, এনথ্রাকনোজ, পচা নিয়ন্ত্রণে এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া বীজ শোধনেও এর ব্যবহার করা হয় ।
![]() |
প্রতীকী ছবি : কার্বেন্ডাজিম |
কীভাবে কার্বেন্ডাজিম কাজ করে ?
এটি প্রবহমান হওয়ায় গাছের পাতায় প্রয়োগ করলে সমস্ত গাছে ছড়িয়ে পড়ে। গোড়ায় প্রয়োগ করলে শিকড়ের মাধ্যমে গাছে ছড়িয়ে পড়ে। তাই যে-সকল ছত্রাক গাছ বা পাতার ভিতরে আক্রমণ করে, তাদের দমনে এটি বেশ কার্যকর।
কার্বেন্ডাজিম এর ব্যবহার
বীজ শোধন, পেঁপে, টম্যাটো, শসা, ঢেঁড়স, বেগুন, মরিচ ইত্যাদি গাছের ঢলে পড়া, চা এর ব্ল্যাক রট, ডাই-ব্যাক, মিষ্টি কুমড়ার পাউডারি মিলডিউ, আমের এনথ্রাকনোজ, পাতা পোড়া, পাতায় দাগ, পচা নিয়ন্ত্রণে এটি ব্যবহার করা হয়।
সাধারণত রোগ হওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় কার্বেন্ডাজিম প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। গাছে রোগ বেশি ছড়িয়ে পড়লে কার্বেনডাজিম ও ম্যানকোজেব একসাথে ব্যবহার করতে হয়।
প্রয়োগ মাত্রা
প্যাকেটের নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রয়োগ করা উত্তম। তবুও নিচের নির্দেশনা অনুসরণ করতে পারেন।
ফসল | রোগের নাম | অনুমোদিত মাত্রা | প্রতি একর | ৫ শতক জমির জন্য (১০ লিটার পানিতে) |
---|---|---|---|---|
মিষ্টি কুমড়া | পাউডারি মিলডিউ | ২ গ্রাম/ লিটার পানি | ৪০০ গ্রাম | ২০ গ্রাম |
আম | এনথ্রাকনোজ | ২ গ্রাম/ লিটার পানি | প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম হারে মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছে ভালভাবে স্প্রে করুন | |
চা | ব্ল্যাক রট, ডাই-ব্যাক | ১ কেজি/ হেক্টর | ৪০০ গ্রাম | ২০ গ্রাম |
বীজ শোধনে ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম কার্বেনডাজিম ব্যবহার করতে হয়।বীজ, রাইজোম, টিউবার শোধনে কমপক্ষে ১৫ মিনিট রাখতে হয় ।
অন্য বালাইনাশকের সাথে প্রয়োগ
সাধারণ কিছু কীটনাশকের সাথে মিশিয়ে স্প্রে করা যায়। তবে চুন, সালফার, বোর্দো মিক্সচার বা ক্ষার জাতীয় উপাদানের সাথে কখনোই মেশানো যাবে না।
কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের কীটনাশকের বানিজ্যিক নাম
বানিজ্যিক নাম | কোম্পানি |
---|---|
অটোস্টিন | অটো ক্রপ কেয়ার |
নোইন | ম্যাকডোনাল্ড |
ক্যালিবার | সিনজেনটা |
এমকোজিম | এসিআই |
গোল্ডাজিম | স্কয়ার |
বেনডাজিম | ন্যাশনাল এগ্রি |
আরবা | ইনতেফা |
টার্বো | হেকেম |
সিডাজিম | সি ট্রেড |
ফরাস্টিন | সেমকো |
কিউবি | মিমপেক্স |
এগ্রিজিম | এমিন্যান্স |
কারজিম | ইনজিনিয়াস |
করোজিম | করবেল |
নোভা | ইয়ন |
জেনুইন | স্যাম এগ্রো |
ইকোজিম | ইস্ট ওয়েস্ট |
পার্ল | ম্যাপ এগ্রো |
সিনোডাজিম | গ্লোবাল |
ট্রাইজিম | অ্যামকো এগ্রি |
সুজিম | সুরভী এগ্রো |
রেডোজিম | রাজীব |
ক্ষতিকর দিক
কার্বেনডাজিম উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়ের জন্য ক্ষতিকর । অতিরিক্ত ডোজ হলে মাটিতে উপকারী জীবাণু , মাটির পুষ্টি উপাদান (N,P,K) অণুজীব , মাটির গঠনকে নষ্ট করে দেয়। গরু ও ছাগল,জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। মানুষের বন্ধ্যাত্ব,এপোপটসিস,মিউটাজেনসহ আরও রোগ হয় । এটি মাটিতে, পানিতে কয়েক সপ্তাহ থেকে যেতে পারে।
সতর্কতাক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে সতর্কতা অবলম্বন করে কার্বেনডাজিম ব্যবহার করতে হবে । প্রয়োগের সময় শরীরে যাতে না লাগে, নাকে বা মুখে না প্রবেশ করে। জমিতে /গাছে অতিরিক্ত প্রয়োগ করা যাবে না। একই জমিতে বারবার স্প্রে করা যাবে না।