শীতকালীন ফুল চাষ

শীতকালে বাগানকে ফুলে ফুলে সাজানোর সময়। শীতকালে অল্প মেয়াদে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুল ফোটে। যা আপনার বাগানকে আকর্ষণীয় করে তুলবে। এসময় ফুলগুলো সতেজ ও সুন্দর হয়। শীতের ফুলের জন্য বেশি মাটিও লাগে না, টবে অনায়াসে রোপণ করা যায়।  পরিচর্যা তেমন প্রয়োজন হয় না, তবে পরিচর্যা করলে ভালো ফলাফল আশা করা যায়।  শীতের ফুল এখনি চারা করার উপযুক্ত সময়। এখন চারা করলে করলে পুরোনো শীতে ফুল পাওয়া যাবে এবং ফুলের আকার ভালো হবে। শীতকালীন ফুলের চারা করার আগে জেনে নিতে হবে শীতকালীন ফুলের জাতের নাম। অন্যথায় পরিশ্রম বিফলে যাবে। শীতকালে আবহাওয়া উষ্ণ আর্দ্র থাকে তাই ফুল গাছ কম মারা যায়। 


শীতকালীন ফুলের তালিকা

শীতকালে ফুলের চারা করার আগে শীতকালীন ফুলের জাত সম্পর্কে জানতে হবে।  শীতকালীন কিছু ফুলের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো : 

  • পিটুনিয়া 
  • জিনিয়া 
  • ইনকা গাধা 
  • গাজানিয়া 
  • ডালিয়া 
  • চন্দ্রমল্লিকা 
  • কসমস 
  • ভারভেনা 
  • এন্টারহেনা 
  • নয়নতারা 
  • জাম্বু গাধা 
  • ইমপিয়েন্স 
  • প্যাঞ্জি 
  • এস্টার 
  • স্যালভিয়া 
  • টেরোনিয়া 
  • ডায়ান্থাস
  • সূর্যমুখী 
  • স্নোবল 
  • ক্যালেন্ডুলা 
  • ফ্লক্স

এছাড়াও আরও অনেক ফুল আছে যেগুলো শীতকালে লাগানো যায়। এমনি বারোমাসি অনেক ফুল শীতকালে অন্য মৌসুমের তুলনায় ফুল বেশি ফুটে এবং সুন্দর হয়। এছাড়াও শীতকালে ফুল গাছের কলম ভালো হয়। 

সুইট উইলিয়াম
সুইট উইলিয়াম

ডায়ান্থাস
ডায়ান্থাস

চন্দ্রমল্লিকা
চন্দ্রমল্লিকা

এস্টার
এস্টার

ডায়ান্থাস
ডায়ান্থাস

জিনিয়া
জিনিয়া

ডালিয়া
ডালিয়া

শীতের ফুল
শীতকালীন ফুল

সুইট উইলিয়াম
সুইট উইলিয়াম

গাদা
গাদা



ফুলের চারা তৈরি করার নিয়ম

ফুলের বীজ থেকে চারা করার জন্য বা কন্দ থেকে চারা তৈরি করার জন্য বিশুদ্ধ বীজ ও কন্দ সংগ্রহ করতে হবে।  এর পর ৪ ভাগের এক ভাগ কোকো পিট, একভাগ ঝুরঝুরে গোবর, দুইভাগ ঝুরঝুরে মাটি নিতে হবে।  মাটি, গোবর, কোকোপিট ভালো করে মিশিয়ে মাদা তৈরি করতে হবে,  সবচেয়ে ভালো হয় ছোট পলি/ওয়ান টাইম কাপ অথবা সিডিং ট্রে তে চারা করা। এতে বীজ থেকে চারা হওয়ার হার বেড়ে যায় এবং রিপটিং সহজ হয়। সিডিং ট্রে তে চারা তৈরি করার জন্য মাটি,গোবর, কোকোপিট মিশ্রিত মাটি ট্রে তে ভালো ভাবে ভরাট করুন। এরপর ট্রের প্রতিটি গর্তে একটি বা দুটি বীজ ট্রের গর্তের মাঝামাঝি রাখুন।  চার দিক থেকে যেন বীজ সমান দূরত্বে বসে। উত্তর হয় বীজ রোপণের পূর্বে বীজের অঙ্কুর বের করে নেওয়া।  এজন্য বীজ ভালো করে রোদে শুকিয়ে ঠান্ডা পানিতে ১৮ থেকে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপরে বীজ গুলো তুলে শুকনো টিস্যু পেপার দিয়ে মুড়িয়ে কাচের গ্লাসের ভিতরে রেখে দিয়ে গ্লাসের মুখ বন্ধ করে দিতে হবে।  উল্লেখ টিস্যু দিয়ে মুড়ানোর টিস্যুতে হালকা পানি স্প্রে করে দিলে ভালো হয়। অঙ্কুরিত বীজ সিডিং ট্রেতে অথবা মাটিতে সরাসরি বপন করতে হবে। 


বীজ বপনের পর হালকা করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।  যাতে মাটিতে রস থাকে। মাটির রস কমে যাতে না যায় এর জন্য নিয়মিত পরিমাণ মতো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।  উল্লেখ অতিরিক্ত পানি দেওয়া যাবে না  অর্থাৎ খেয়াল রাখতে হবে যে মাটিতে পানি দিলে একদম কাদা না হয়ে যায়। 


তিন থেকে সাতদিন পর চারা গজালে খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত রোদ যেন না পড়ে। অতিরিক্ত রোদে চারা নষ্ট হয়ে যায়।  তাই বীজতলায় ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে।  রোদের সময় পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।  


চারা রোপণ

চারা রোপণের উপযুক্ত হলে সাবধনে তুলে বড় টবে বা সরাসরি মাটিতে রোপণ করতে পারবেন। বিকেল বেলায় চারা৷ রোপণ করবেন।  রোপণের পর পানি দিবেন। চারা রোপণের জন্য  মাটি সাথে গোবর, টিএসপি, এমপি, ইউরিয়া, জিপসাম ইত্যাদি মিশিয়ে ৭দিন রেখে দিন। পরে টবে ভরে গাছ রোপণ করুন। শুধু মাটি ও গোবর মিশিয়ে চারা রোপণ করতে পারবেন এবং চারা একটু বড় হলে সার দিতে পারবেন। 


চারা রোপণের পর দেখবেন টবের মাটি যেন বেশি শক্ত না হয়ে যায়।  নিড়ানি দিয়ে মাটি আগলা করে দিবেন। প্রয়োজন মতো পানি দিবেন। 


ট্রেনিং অথবা প্রুনিং 

চারা গাছকে সুন্দর আকৃতি দেওয়ার জন্য ট্রেনিং করা হয়। যেমন গাদা চন্দ্রমল্লিকা চারা ছোট থাকতেই ডাবা কুশি কেটে দিয়ে সুন্দর আকার দেওয়া যায়।


গাছ প্রাপ্ত বয়স্ক হলে ছাঁটাই করে সুন্দর আকৃতি দেওয়া যায়। একে প্রুনিং বলে। ট্রেনিং অথা প্রুনিং গাছের সুন্দর আকৃতি দেয় না, অধিক ফুল ও ফল দিতে সাহায্য করে। 


সার ব্যবস্থাপনা

ফুল গাছের আকৃতি দেখে সার প্রয়োগ করা ভালো। ফুল আসার পূর্বে টিএসপি, এমওপি অথবা ডিএপি সার দিতে পারবেন।  ইউরিয়া সার খুব বেশি দেওয়া যাবে না। অনেক ক্ষেত্রে না দেওয়াই উত্তম।

আপনারঅদৃশ্যমন্তব্য
Cancel

অবাঞ্চিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন